#ভ্রমণ_কাহিনি-

‘‘লাদাখ-কাশ্মীর-হিমাচল‘‘ আমার জীবনের স্বপ্নময় সেরা ট্যুর নিয়ে কিছু কথা:




সবারই কিছু না কিছু শখ থাকে তেমনি বাইক রাইডিংটা আমার কাছে শখ, আর এই শখ থেকেই একটা সময় অপরূপ সৌন্দর্যের সিলেট, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ির পাহাড় পর্বত সহ সমগ্র দেশেই বাইক রাইডিং শুরু করি। 

তারপর একটা সময় আসে যখন বাইক রাইডিং নিয়ে মনের মধ্যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কিছু স্বপ্ন তৈরী হয় একসাথে ৬৪ জেলায় বাইক রাইডিং এবং লাদাখ-কাশ্মীর সফর ছিল তারই অংশ বিশেষ, আলহামদুলিল্লাহ্ মহান আল্লাহ্ টানা ৯ দিনে ৬৪ জেলায় বাইক রাইডিং এবং ১৫ দিনে লাদাখ-কাশ্মীর সফর অত্যন্ত সুন্দর ও সফল ভাবে সম্পন্ন করিয়েছেন।

লাদাখ-কাশ্মীর আমাদের আরো আগেই যাওয়ার কথা থাকলেও ইন্ডিায়ান ভিসা থাকা সত্যেও করোনার প্রকোপের কারনে যেতে পারিনি। 

ভৈরবের আরো একজন রাইডিং পার্টনার মোহাম্মদ হোসাইন ও সাভারের মোঃ সালাহ্ উদ্দিন সহ আমরা তিনজন অনেক দিন যাবৎ’ই প্ল্যান করে আসছিলাম লাদাখ-কাশ্মীর যাওয়ার জন্য, ইদানিং পুঃনরায় ইন্ডিয়ান ভিসা চালু হওয়ায় আমরা আমাদের কাঙ্খিত সফর ‘‘লাদাখ-কাশ্মীর‘‘ যেতে সক্ষম হয়।


এই ট্যুর নিয়ে বিস্তারিতঃ-


১ম দিন ০৫-০৫-২২ ইং:

প্রথমেই আমরা তিনজন ভৈরব থেকে মহানগর প্রভাতি ট্রেনে আখাউড়া পৌছাঁয় সকাল ১০:৪৫ মিনিটে, সেখান থেকে অটোতে করে আখাউড়া চেকপোস্ট পৌছে সেখানকার যাবতীয় ফরমালেটি শেষ করে আগরতলা ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশন হয়ে ত্রিপুরার রাজধানি আগরতলা পৌছাঁয় ভেলা ৩টায়। সেখান থেকে ডলার একচেঞ্জ ও দুপুরের খাবার সেরে ৫:৩০ মিনিটের ফ্লাইটে আগরতলা এয়ারপোর্ট থেকে দিল্লী পৌছাঁয় সন্ধ্যা ৭:৩০ মিনিটে।

 সেদিন আমাদের সাথে আরো যুক্ত হয় কুমিল্লা’র এসএম জাকারিয়া ও জুনায়িদ ইকবাল, আমরা পৌছানোর পর তারা কলকাতা হয়ে ট্রেনে করে দিল্লী এসে আমাদের সাথে জয়েন করে। আমাদের গ্রুপ মেম্বার এখন ৫জন, রাতে আমরা একটি হোটেলে রাত্রি যাপন করি।


২য় দিন ০৬-০৫-২২ ইং:

সকালের নাস্তা সেরে চলে যায় দিল্লী করোল বাগ বাইকের হাটে সেখানে যে যার মত পছন্দ করে ৫জনের ১২ দিনের জন্য ৪টি বাইক ভাড়া নেওয়া হয় যথাক্রমে BAJAJ DOMINAR 400cc, YAMAHA FZS V3 150cc, BAJAJ AVENGER 160cc এবং আমার জন্য নেয় BMW G310 cc জাকারিয়া ও জুয়ায়িদ তারা দু’জন একই বাইকে চড়বে Avenger দিয়ে। বড় ট্যুরে যাওয়ার আগে বাইক ভালো করে সার্ভিস করিয়ে নিতে হয় তাই সেদিন আমরা প্রায় সারাদিন বাইকের পিছনেই কাটিয়ে দিলাম মাঝখানে শুধু বাকী থাকা কিছু কেনা কাটা কাছাকাছি দিল্লীর মার্কেট গুলো ঘুরে সেরে ফেললাম।

 সমস্ত কাজ সেরে রাতে আমরা ঐতিয্যবাহী দিল্লী জামে মসজিদের ওখানে যেয়ে জমপেশ খানাপিনা করে ওইদিন আমরা রাতে একই হোটেলে রাত্রি যাপন করলাম,পরদিন ভোরে আমরা আমাদের ড্রিম ট্যুর লাদাখ-কাশ্মীরে উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবো। 


৩য় দিন ০৭-০৫-২২ ইং: 

ভোর ৪:৩০ মি. উঠে আমরা ঠিক ৫:৩০ মিনিটে বাইক স্টার্ট করে দিল্লী থেকে লাদাখ-কাশ্মীরের কাঙ্খীত পথে যাত্রা শুরু করি, আমাদের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথম দিন ৫০০ কি.মি. বাইক রাইড করে পান্জাব প্রদেশের পাঠানকোট অবস্থান করবো বলে মোনস্থির করি। 

৪২-৪৬ সে. ডিগ্রি তাপমাত্রার প্রচন্ড দাবদাহ উপেক্ষা করে আস্তে আস্তে দিল্লী প্রদেশের শহুরে রাস্তাঘাটকে পিছনে ফেলে পানিপথ, পাটিয়ালা, চন্ডিঘর, লুদিয়ানা, অম্রিতসার সহ আরো অনেক শহরের পথ ধরে আমাদের প্রথমদিনের লক্ষ্যে এসে রাত ৯টায় পাঠানকোট পৌছাঁয় এবং সেখানে একটি হোটেলে আমরা রাত্রি যাপন করি।


৪র্থ দিন ০৮-০৫-২২ইং:

সকাল ১১:৩০ মিনিটে পাঠানকোট থেকে সকালের নাস্তা সেরে জম্মোর পত্নিটপের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। লক্ষ্যে পৌছাঁনোর জন্য আমাদের যেতে হবে ২১৫ কি.মি., ৪৫* ডিগ্রি সে. তাপমাত্রার পাঞ্জাব প্রদেশ শেষ করে আরেক গরমের রাজ্য জাম্মো’র ( জাম্মো এবং কাশ্মীর মিলে একটি প্রদেশ ) বিভিন্ন শহর হয়ে রাত ৮টায় পত্নিটপের চূড়ায় পোছাঁয়। 

আশ্চর্যের ব্যাপার হলো জম্মোতে তাপমাত্রা ৪২-৪৬ ডিগ্রি সে. অথচ মাত্র ১০০ কি.মি. দূরে পত্নিটপে হিম ঠান্ডা এবং বছরের কয়েক মাস এখানে বরফ পরে । পত্নিটপ খুবই চমৎকার একটা জায়গা এবং থাকার মত সরকারি কটেজ সহ অনেক ভালো ভালো হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে, যারা জম্মো যাবেন অবশ্যই পত্নিটপ হয়ে আসবেন।


৫ম দিন ০৯-০৫-২২ইং:

আমরা রওয়ানা হবো পৃথিবীর ভূস্বর্গ খ্যাত কাম্মীরে আজকে অবস্থান করবো পেহেলগাম, সেখানে পৌছাঁতে হলে বাইক রাইড করতে হবে ১৫৯ কি.মি. পিাহাড়ি রাস্তা তাই যেতে আমাদের সময় লাগবে বিরতি সহ প্রায় ৬ ঘন্টা। চমৎকার একটা রাত্রি যাপন করে সকালে পত্নিটপের কিছু সাইটসিং করে ১১.৩০ মিনিটে বাইক স্টার্ট করলাম পেহেলগামের উদ্দেশ্যে। 

পেহেলগামে যেতে রাস্তায় বড়সর টানেল পরবে আর বেশীর ভাগ পাহাড়ি রাস্তাটা বরফগলা পানির স্রোতাল জলপ্রপাতের পাশ দিয়ে বয়ে চললো, পানির ঝির ঝির কল কল শব্দটা শুনতে বেশ দারুন লাগছিল।

 এই অসাধারণ প্রকৃতি এভাবে উপভোগ করতে করতে প্রায় সন্ধ্যা বেলায় আমরা পেহেলগাম পৌছাঁয়, চারি পাশের পর্বত গুলো বরফে ঢাকা এমন একটা জায়গায় আমরা রাত্রি যাপনের জন্য হোটেল বুক করি। পরদিন সকাল ৯টায় আমরা নাস্তা সেরে নৈস্বর্গিক প্রকৃতির পেহেলগাম উপভোগ করতে বেরিয়ে পরি, 

এখানে অনেক গুলো স্পট আছে এর মধ্যে আরো ভ্যালি, বেতাব ভ্যালি, চন্দনওয়ারি অন্যতম তাছাড়া এখানকার জলপ্রপাত গুলোতে রাফটিংও করা যায়। পৃতিবীতে যদি কোন জায়গাকে স্বর্গ বলা হতো তাহলে সেটা কাশ্মীর’ই হতো।


৬ষ্ঠ দিন ১০-০৫-২২ইং

পেহেলগাম ঘুরাঘারি শেষ করে এদিন বিকেলেই আমরা জাম্মো-কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় কারন মাত্র ৯০ কি.মি দূরেই শ্রীনগর যেতে সময় লাগবে ২.৩০ মিনিট। শ্রীনগর পৌছেঁ প্রথমে আমরা ডাল গেটে হোটেল খুজঁতে থাকি কিন্তু ডাল গেটের বেশীরভাগ হোটেল বুক এবং ভাড়া অনেক বেশী, 

যেহেতু আমরা বেশী দিনের জন্য ঘুরতে বেড়িয়েছি তাই আমাদের বাজেটের মধ্যে থাকতে হবে এবং মিতব্যয়ী হতে হবে তাই আমরা ডালগেট ছেড়ে জিরো ব্রিজের কাছে একটি সাশ্রয়ী হোটেলে যেয়ে থাকি। 


৭ম দিন ১১-০৫-২২ইং:

এদিন আমরা পুরো দিন শ্রীনগর শহরে ঘুরেবেড়ায়, এখানকার উল্লেখযোগ্য স্থান সমূহের মধ্যে ডাল লেক, মোঘল গার্ডেন, নিসাত বাগ, পরি মহল, ফ্লটিং বেজিটেবল মার্কেট, ইন্দিরা গান্ধী টিলিপ গার্ডেন ইত্যাদি ।

 এছাড়াও লাল চক একটি দর্শনীয় স্থান এবং মার্কেট গুলো এর আশে পাশে হওয়ায় কাম্মীরের বিখ্যাত শাল ও তাদের ঐতিহ্য বহন করে এমন অনেক কেনাকাটা করি, এছাড়াও আনুসাঙ্গিক অন্যান্য কেনাকাটা গুলোও আমরা এখান থেকেই সেরে নিলাম। ঐদিন রাতেও আমরা একই হোটেলে থেকে শ্রীনগরেই অবস্থান করি এবং কিছুটা রাতের শহরটাকে ঘুরে বেড়িয়ে উপভোগ করে দেখি।


৮ম দিন ১২-০৫-২২ইং: 

আমরা সকালে বাইকে ব্যাগেজ সহ ৬টায় আমরা ডাল লেক চলে যায়, সেখানে লেকের পার বাইকগুলো রেখে আমরা সকালের মনমোগ্ধকর শান্ত নিরিবিলি পরিবেশে ডাল লেকের বোটে ঘুরাফেরা করি। তারপর সেখান থেকে কাশ্মীরের আরেক দর্শনীয় স্থান ৫৩ কি.মি দূরের গোলমার্গের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়, সেখানে ক্যাবলকার/গান্ডোলা দিয়ে ঘুরা এবং বরফের চাদরে ঢাকা পর্বত ও প্রকৃতি দেখার জন্য অসাধারণ সুন্দর জায়গা। 

গোলমার্গের ঘুরাফেরা শেষ করে সেখান থেকে দুপুর বেলা রওয়ানা হয় কাশ্মীরের অপরূপ সৌন্দর্য খ্যাত ও হিম করে দেওয়ার মত ঠান্ডা এলাকা সোনামার্গের দিকে। গোলমার্গ থেকে সোনামার্গের দূরত্ব ১২৫ কি.মি. পাহাড়ি রাস্তা তাই সেখানে যেতে বিরতি সহ সময় লাগবে ৪ ঘন্টার উপরে, আকা বাকা উচু নিচু পথ ধরে যেতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেলো,

কাম্মীরি বকরির গোশত দিয়ে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে গেলাম কিন্তু মাঝরাতে কন কনে ঠান্ডা ঝেকেঁ বসায় মাইনাস তাপমাত্রায় গায়ে মোটা জেকেট ও কম্বল মুড়িয়ে সেদিন রাতে হোটেল রুমে ঘুমালাম। এরকম তাপমাত্রায় এর আগে কখনোই ঘুমাইনি, কাশ্মীরের ঠান্ডা শুস্ক আবহাওয়ায় দিন দিন আমাদের নাক-মুখ ফেটে ফুলে যাচ্ছিলো তাছাড়া বাইক রাইড করলে হেলমেটের বাইজরের (সামনের গ্লাস) ফাকা দিয়েও ঠান্ডা বাতাস ভিতরে প্রবেশ করে।


৯ম দিন ১৩-০৫-২২ইং: 

আমরা প্রচুর ঠান্ডার মধ্যেই ভোর ৪ টায় উঠে ৫ টার আগেই হোটেল চেক আউট করে মোটরসাইকেলে ব্যাগেজ বেধে ফেলি, রাস্তার কাজ চলায় কারগিল-লাদাখের উদ্দেশ্যে যেতে চাইলে ৫-৬ টার মধ্যে রওয়ানা করতে হবে। কিন্তু আমরা সবাই যখন বাইক নিয়ে রেডী তখন আমার বাইকটা হঠাৎ স্টার্ট নিচ্ছিলো না, সবাই মিলে ধাক্কাধাক্কি করে এবং অন্য বাইক থেকে ব্যাটারী খুলে পরিবর্তন করেও স্টার্ট করাতে পারলাম না। 

আমার বাইকটা দিল্লী থেকে ভাড়া নেওয়ার পূর্বে যখন টেস্ট ড্রাইভ দিচ্ছিলাম তখনই এটাতে আমার কাছে ব্যাটারীটা কিছুটা খারাপ মনে হওয়ায় তাদের পরিবর্তন করে দিতে বলি কিন্তু তারা বাইক নেওয়ার সময় পরিবর্তন করেছে বললেও আসলে তা করেনি। আশেপাশে এত ভোরে কোন গ্যারেজও পাবো না তাও আবার সোনামার্গের মতো জায়গায় !! 

একজন কাশ্মীরির কাছ থেকে জানা গেল ২ কি.মি সামনে একটা গাড়ী হালকা পাতলা মেরামতের গ্যারেজ আছে কিন্ত এখানে বাইকের কোন গ্যারেজ নেই সেটা ৪৪ কিলো পিছনে কাঙ্গান-এ পাওয়া যাবে, সেই মূহুর্তে কি আর করার ঠান্ডায় সাবাই আবার হোটেল রুমে ফিরে গেল আমি সকালের অপেক্ষা করতে লাগলাম বাহিরে বসেই কারন আমার কাছে মনে হল ২ কি.মি দূরের গাড়ীর গ্যারেজটা খুললে একই ভোল্টের একটা বড় ব্যাটারী দিয়ে চেষ্টা করলে হয়েতো কাজ হবে আর তাই হলো কিন্তু ঘড়িতে সময় তখন সকার ১০টা।

তারপর আমার বাইক ঠিক হওয়ার খবরটা সবাইকে দিয়ে তখন বললাম আমরা ভোরে রওয়ানা না হতে পারলেও এখনই রওয়ানা করে চেষ্টা করে দেখবো যাওয়া যায় কিনা, তাতে সবাই রাজি হলো তানাহলে সোনামার্গে একদিন অলস সময় কাটাতে হবে। 

কিছুদূর সামনে যেতেই চেকপোস্ট তারা যেতে দিবে না যতক্ষণ না রাস্তার কাজ শেষ হয়, তাই বিকেল ৪টার আগে যাওয়া যাবে না এই চেকপোস্ট অতিক্রম করে আর ৪টায় রওয়ানা হলে লাদাখের এই দূর্গম রাস্তাই হাজার হাজার ফুট পর্বত মালার উপর দিয়ে কার্গিল পৌছানো আমাদের জন্য দুস্কর ব্যাপার। 

তাই শেষ পর্যন্ত চেকপোস্টে থাকা অফিসারকে আমরা বাংলাদেশী বলে খুব রিকোয়েস্ট করে বলাই একটা সময় ১.৩০মিনিটের দিকে আমাদের যেতে দিল কার্গিল লাদাখ রোডে। 


সোনামার্গ থেকে কার্গিল ১২৩ কি.মি. দুর্গম পথ, আজ আমাদের যেতে পৃথিবীর কয়েকটি সর্বোচ্চতার এবং বিপদজনক রোডের মধ্যে একটি জজিলা পাস পয়েন্ট দিয়ে। বালটালে প্রথমে একটি চেকপোস্ট পরবে এর পর থেকেই মূলত জজিলা পাস এলিভেশন রোড শুরু হয়। লাদাখ দুই দিক দিয়ে যাওয়া যায় একটি এই জজিলা পাস পয়েন্ট হয়ে আর অপরটি মানালি হয়ে আরেক উচ্চতার রোড রোটাঙ পাস দিয়ে। 

জজিলা পাসের নিচে ইন্ডিয়ান আর্মির অমরনাথ বেস ক্যাম্প রেয়েছে এখন, ১৯৪৮ সালে ইন্ডিয়া পাকিস্তানের পৃথিবীর প্রথম সর্বোচ্চতম স্থানে ট্যাংক নিয়ে এখানে যুদ্ধ সংগঠিত হয় যা এখন জজিলা পাস জিরো পয়েন্ট নামে পরিচিত। 

তারপর আস্তে আস্তে আমরা পর্বত মালার হাজার হাজার ফুট উপর দিয়ে পথ ধরে চলতে লাগলাম অপরূপ সুন্দর বরফের চাদরে ঢাকা পর্বত গুলোর মধ্য দিয়ে, সেইসাথে বেশী উপরে উঠে গেলে মাঝে মাঝে শ্বাসকষ্ট অনুভূত করতে শুরু করলাম, বর্তমানে এখানে জজিলা টানেলের কাজ চলছে একটা সময় এতো উপর দিয়ে আর যেতে হবে না এবং সময়ও অনকে কম লাগবে। 

এই পথের আরেক সুন্দর জায়গা দ্রাস হয়ে আমরা সন্ধ্যায় কার্গিল পৌছাঁয়, সেখানে পৌছে আমরা খুবই সুন্দর সকল সুবিধা স্বম্বলিত শহরের একটি সরকারি কটেজে উঠি মাত্র ৫০০ রুপিতে, সেদিনই আমরা সাশ্রয়ী ভাড়াই রাত্রি যাপনের জন্য ভালো থাকার জায়গা খুজেঁ পায়। 

পুরো শহরটি উচু নিচু পাহাড়ি ভুমিতে, রাতে হোটেলের বাহিরে আমরা খাবার খেতে যেয়ে শহরের অনেক খানি ঘুরে বেরিয়ে আসি। এই কার্গিল নিয়ে অনেক ইতিহাস রয়েছে ১৯৯৯ সালে কাশ্মীরের কিছু বিচ্ছিন্ন স্বাধীণতাকামীদের সাথে দ্রাস, কার্গিলে একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল (ইন্ডিয়া সব সময় দাবি করে পাকিস্তান এতে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে জড়িত) যা এখন কার্গিল যুদ্ধ নামে বেশী পরিচিত। 

১৬০০০ ফুট উপরে টলোলিং পাহাড়ের চূড়া যা এখন ভাটরা টপ নামে পরিচিত সেখানে এতো উচ্চতায় তাদের পর্বতে ক্ল্যাম্বিং করে করে যুদ্ধ করতে হয়েছিল, এখানে শীতকালে মাইনাস -৪৮ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেট তাপমাত্রা পর্যন্ত হয়ে যায়।


১০ম দিন ১৪-০৫-২২ইং: 

সকাল ৯টায় আমরা লাদাখের উদ্দেশ্যে কার্গিল ত্যাগ করি, লাদাখ পৌছাতে আমাদের পথ বাকী আরো ২১৪ কি.মি। সারি সারি পাথুরে পর্বত মালার উপর দিয়ে আমরা চলতে থাকি, লাদাখের পাথুরে পর্বত গুলোর রং একেক টা একেক রকম এগুলো দেখতে একেকটা মেরুন রঙের ,লালচে রঙের, হলদে রঙের আবার কোন কোন টা দেখতে কালো রঙের। 

লাদাখের কিছু কিছু রাস্তা অত্যন্ত ভয়ানক কিছু কিছু জায়গায় পাথর কেটে সারি সারি করে বাসিয়ে রাস্তা বানানো এগুলোতে পানি থাকলে পিচ্ছিল হয়ে টায়ার গ্রিপ করতে চায় না। পথে পর্বত গুলোর নিচে তাকাতেও যেন কেমন ভয় লাগছিল আবার পাহাড় কেটে রাস্তা করায় অনেক রাস্তায় মাথার উপর দিয়েও পাহাড় ঝুলানো দেখতে মনে হয় এগুলো যেকোন সময় খসে পরবে। অনেক জায়গায় আমরা এই খসে পরা বড় বড় পাথর পিন্ড পেয়েছি এগুলো উপেক্ষা করেই আমাদের চলতে হয়েছে গন্তব্যের দিকে। 

লাদাখের পথে মাঝে মাঝে শ্বাসকস্টে বুকে চাপা দিয়ে রাখে আর কানগুলো বায়ুমন্ডলের চাপে একবারে স্তব্দ হয়ে থাকে। এভাবে চলতে চলতে প্রায় সন্ধ্যায় আমরা লাদাখ পৌছাঁয়। 

শহরে একটি মুসলিম পরিবারের হোটেলে উঠি, লাদাখের বেশীর ভাগ পরিবারেরই পর্যটকদের জন্য নিজস্ব থাকার হোটেল রয়েছে আবার অনেকের নিজের বাড়ীর সামনেও হোটেল বানানো আছে, অনেক জায়গায় হোম স্টে ও পাওয়া যায়। এদের প্রায় বাড়ী গুলো পাথর কেটে ছোট ছোট টুকরো করে ওগুলো দিয়ে বানানো এবং দরজা জানালায় কাঠের চমৎকার সব শৈল্পিক নকশা করা যা অন্য সব শহর থেকে তাদের ঘরবাড়ী দেখতে অনকেটাই ভিন্ন।

রাতে লাদাখে হোটেল রুমে অবস্থান করতে অনেকটা কষ্ট হচ্ছিল কারন অক্সিজেনের অভাবে অস্বস্তি লেগে বার বার ঘুম ভেঙে যাচ্ছিল এবং কয়েক জনের অতিরিক্ত ড্রাইনেসের কারনে নাক দিয়ে রক্ত পরছিল।


১১তম দিন ১৫-০৬-২২ইং:

আমরা সারাদিন লাদাখ শহর ও তার আশে পাশের পর্যটন কেন্দ্র গুলো ঘুরে বেড়ায়। লাদাখ এমন এক জায়গা যেখানে সব ধরনের ট্রাভেলারের জন্যই ঘুরে বেড়ানোর চমৎকার সব দর্শনীয় স্থান রয়েছে। 

লাদাখের ৩০০-৪০০ কি.মি. এরিয়ায় ফেমাস স্পট গুলোর মধ্যে রয়েছে প্যাংগং লেক, খারদুংলাপাস, নোভরা ভ্যালী, সোমুরে লেক, লে প্যালেস, সিমোগোম্বা, থিকসে মনেসট্রি, ম্যাগনেটিক হিল ইত্যাদি। বাংলাদেশ সহ ইন্ডিয়ার আশে পাশের মোট ৫টি দেশের অনুমতি না থাকায় আমরা একেবারে খারদুংলা টপের দৃশমান কাছাকাছি যেয়ে ফিরে আসি, 

তাছাড়া খারদুংলা পাস যেতে পারলে আমরা নোভরা ভ্যালীও যেতে পারতাম। সেদিন রবিবার বন্ধ থাকায় এবং পরদিন সোমবার বৌদ্ধ পূর্ণিমা হওয়ায় আমরা বিশেষ অনুমতির জন্য লাদাখ ডিসি অফিসেও যোগাযোগ করতে পারিনি। ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য নানান রঙের উচু উচু পর্বত লেক আর অন্য রকম প্রকৃতির স্বাদ নেওয়ার জন্য লাদাখ একটি চমৎকার জায়গা।


১২তম দিন ১৬-০৬-২০২২ইং

ভোর ৫ টায় আমরা লাদাখের অপর প্রান্তের রোড মানালি উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়, রোটাং পাস হয়ে মানালি ৪৩৩ কি.মি পথ সাইটসিং আর বিরতি সহ যেতে সময় লাগবে অন্তত পক্ষে ১৫ ঘন্টা। জন মানবহীন পর্বতে ঘেরা পথে প্রায় ৪০০ কি.মি. রাস্তায় কোন প্রকার পেট্রোল পাম্প পাওয়া যাবে না তাই সাথে গ্যালনে করে আমরা অতিরিক্ত তেল নিয়ে নেয়। কাশ্মীর-লাদাখের রাস্তা থেকে লাদাখ-মানালির রাস্তা আরো বেশী ভয়ানক ও ভাঙা অফ রোড রয়েছে অনেক। পথে ল্যাটোতে সকাল ৮ টায় আমরা সকালের নাস্তা করি রাস্তার পাশের চমৎকার একটি রেস্তোরাঁয়, তারপর আমরা আস্তে আস্তে টাংলাংলা টপে ১৭,৫৮২ ফুট উপড়ে উঠি। টাংলাংলা টপের পুরো পথটার আশে পাশের পর্বত সব গুলো বরফের চাদরে ঢাকা এমনকি রাস্তার পাশে ৩০-৪০ ফুট উচু বরফের স্তূপের ভেতর দিয়ে যেতে হয় অনেকটা রাস্তা, ঐজায়গা গুলো একে বারেই হিম শীতল।


টাংলাংলা থেকে কিছু দূর নামার পর আমরা হঠাৎ করে তুষার ঝড়ের কবলে পরে যায়, তখন রাস্তায় তেমন কিছুই দেখছিলাম না হেলমেটের বাইজরে পর্যন্ত বরফের পুরু আস্তরণ জমে যাচ্ছিলো, সেসময় এতোটায় ঠান্ডা লাগছিলো যে বাইক থামালেও বরফে জমে যাবো। তুষার ঝড়ে একতো হাইপার টেনশন বেড়ে গিয়েছিলো তার উপরে আবার অক্সিজেনের অভাব, তখন তারাহুরা করে রেইনকোট পরতে গেলে এতোটাই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছিল মনে হচ্ছিল সেখানেই শুইয়ে পরি। অনেক কষ্ট করে ঐসব রাস্তা গুলো অতিক্রম করি, পর্বতের এতো উপরে জীবনের প্রথম এমন পরিস্থিতিতে পরে সত্যিই সেদিন খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।

এভাবেই হিমাচল প্রদেশের পৃথিবীর চমৎকার সুন্দর ও ভয়ানক রাস্তা গুলো প্যাং, নাকিলা পাস, গাটা লোপ, সারচো, বড়ালচা মধ্য দিয়ে যেতে যেতে আমরা সেদিন রাত হয়ে যাওয়ায় মানালি থেকে প্রায় ১০০ কি.মি. দূরে জিসপাতে থাকি। জিসপা অসাধারণ সুন্দর একটি জায়গা চারিপাশে বরফ আর সবুজ পর্বতে ঘেরা একটি ছোট্ট গোছানো শহর। অফ রোড আর ঠান্ডায় সবাই কিছুটা ক্লান্ত হয়ে যাওয়ায় আমরা পরদিন সকালে দেরী করে একটা ভালো বিশ্রাম নিয়ে ঘুম থেকে উঠবো, রাতের খাবার সেরে এই প্ল্যান করে হোটেল রুমে ঘুমাতে যায়। 


১৩তম দিন ১৭-০৬-২২ইং 

আমরা জিসপা থেকে ভালো বিশ্রামের পর প্রায় ১২ টায় রওয়ানা করি, গন্তব্য মানালি হয়ে আবার দিল্লীর পথে যতটুকু যাওয়া যায়। সবুজ অরন্যের পাহাড় পর্বতে ঘেরা এই পথে কিলং, শিশো হয়ে পৃথিবীর আরেক ভয়ানক রোড রোটাং পাস, অতল টানেল হয়ে মানালি এবং কুল্লো মানালি পৌছায় প্রায় ৪টার সময়। কাশ্মীর, লাদাখ ও মানালি আসার পথে হিমাচল প্রদেশের এতো সব অপূর্ব জায়গা ঘুরে মানালিতে বেশীক্ষণ ঘুরতে ইচ্ছে করেনি। তাছাড়া আমাদের কাছে তখন মানালিতে প্রচুর কোলাহল মনে হচ্ছিলো, কাশ্মীর-লাদাখ ভ্রমনে গত কিছুদিন শান্ত নিরিবিলি পরিবেশে থেকে মানালিতে মোটেও ভালো লাগছিলো না তাই আমরা মানালিতে বেশী সময় না ঘুরে দিল্লির পথে রওয়ানা হয়ে যায়। দিল্লির পথে যেতে যেতে রাত হয়ে গেলে এবং আবহাওয়া খারাপ হলে বুনটার, মেন্ডি, সুন্দর নগর হয়ে আমরা রাত ১২টার সময় বিলাশপুরে একটি হোটেলে উঠে রাত্রি যাপর করি।


১৪ তম দিন ১৮-০৬-২২ 

আমরা সকাল ৬টায় হোটেল রুম ত্যাগ করে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়, দিল্লি পৌছাতে আরো ৪৩০ কি.মি. পাহাড়ি পথ বাকি আছে এবং কিছু রাস্তা তেমন ভালো না তাই যেতে সময় লাগবে বিরতি সহ আরো অন্তত পক্ষে ১২ ঘন্টা। কিছু দিন বরফের রাজ্যে থাকার পর হঠাৎ দাবদাহ গরম শুরু হওয়ায় অনেক খারাপ লাগছিল তখন, ৪০-৪৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পথে পথে পানি পানের বিরতি দিয়ে হিমাচল প্রদেশ ও পাঞ্জাব প্রদেশের বিভিন্ন শহর ঘুরে পানিপথ হয়ে আবার দিল্লি পৌছায় সন্ধ্যার সময়। তারপর যেখান থেকে বাইক নিয়ছিলাম দিল্লির কারল বাগে তাদের ওখানে আমরা বাইক গুলো ফিরিয়ে দেয়, আমাদের সাথে পেপারস সহ কিছু ফরমালেটিস আছে সেগুলো শেষ করে বাইক চেকিং করে এবং আমাদের কাছ থেকে ৫০০০ টাকা করে জামানত রেখেছিল সে গুলো ফিরিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে আমাদের দিল্লি -কাশ্মীর-লাদাখ-মানালি হয়ে আবার দিল্লির ৩১০০ কিলোমিটারের রাউন্ড ট্রিপটি সফল ভাবে শেষ হয়,আলহামদুলিল্লাহ্।

তারপর আবার দিল্লির সেই একই হোটেলে উঠি কারন যাওয়ার আগে আমরা দিল্লি যে হোটেলে ছিলাম সেখানে আমাদের কিছু ব্যাগ রেখে গিয়ে ছিলাম। ১৮ ও ১৯ মে আমরা দিল্লিতে থেকে ১৫ দিনের ইন্ডিয়ার সফর শেষ করে ২০-০৫-২২ইং দিল্লি থেকে ফ্লাইটে আগরতলা এরপর সেখানখার ইমিগ্রেশন হয়ে সেদিনই বাড়ী পৌছায়।


এই ট্যুরের খাবার ও অন্যান্য খরচ:


প্রতিদিন আমাদের খাবারের তালিকায় রুটি ও ম্যাগি নুডুলসই ছিল বেশীরভাগ সময়, কারন তাদের খাবারের বেশীরভাগ আইটেমই আমাদের অজানা। তাছাড়া তাদের ভিন্ন ভিন্ন এলাকা ভেদে ভাষার ধরন আলাদা রকমের হওয়ায় অনেকে সময় তারা কি খাবারের আইটেমের কথা বলছে তা বুঝতে সমস্যা হতো। অনেক সময় কিছু না বুঝলে বলতাম ম্যাগি নুডুলস্ দেন, আর যেদিন কোথাও ভাত পেতাম পেট ভরে খেয়ে নিতাম। আমরা ভাতে মাছে বাঙালি ২দিন ৩দিন ভাত না খেলে কোন কিছুতেই পেট ভরে না !!

ইন্ডিয়াতে প্রায় সব জায়গাতেই আমার কাছে খাবার দাম মনে হয়েছে এমন কি সমগ্র ইন্ডিয়াতে ১৫-২০ রুপির নিচে আমরা চা খেতে পারিনি, এক প্লেট ডাল কিংবা সবজির দাম ১৫০ রুপি আর একটি রুটি ২০-৩০ রুপি ও ডিম অমলেট ৩০ রুপি করে। রোডের কাছাকাছি পয়েন্টে খাবার খেতে চাইলে এগুলোই ছিল সেকানকার সবচেয়ে স্বস্তা খাবার আর একটু ভালো খাবারের চিন্তা করলে ৫০০-৬০০ রুপি করে লাগতো। 

আমাদের পুরো ট্যুরে পেট্রাল লেগেছে প্রায় ১৫০০০/- টাকার এবং পেট্রোল ১০৫-১১৪ রুপির নিচে কোথাও পাইনি যা আমাদের দেশীয় টাকাই হিসাব করলে গড়ে ১৩২ টাকা করে পরে, আমাদের দেশে ৮৯ টাকাই পেট্রোল পাওয়া যায় ৫-১০ টাকায় চা ৫-১০ টাকায় রুটি ১০-১৫ টাকায় ডাল সবজি পাওয়া যায়। ইন্ডিয়া থেকে এসব খাবারের দাম আমাদের দেশে তুলনামূলক ভাবে অনেক কম দামে আমরা খেতে পারি। আর থাকার হোটেল,রিসোর্ট,কটেজ ইত্যাদির ভাড়া আমার কাছে খুব বেমী মনে হয়নি।

আমরা যেহেতু বেশী দিনের জন্য বাইক ট্যুরে গিয়েছিলাম তাই সব সময়ই চেষ্টা করেছি বাজেটের মধ্যে চলতে, পুরো ট্যুরে আমাদের জনপ্রতি এয়ার টিকিট সহ সর্বমোট ১,০০,০০০/- টাকা বা তার কিছু বেশী খরচ হয়েছে। আমরা যদি এয়ার টিকিট ছাড়া বাসে বা ট্রেনে করে যেতাম তাহলে আমাদের ২দিন সময় বেশী লাগতো আর খরচ কিছুটা সাশ্রয় হতো।

আমার কাছে এই সফরটিতে অঞ্চল ভেদে ইন্ডিয়ার মানুষজন ভিন্ন ভিন্ন রকম মনে হয়েছে, তবে বেশীর ভাগ জায়গাতেই তাদের ট্যুরিস্টদের সাথে অনেক হেল্পফুল মনে হয়েছে। আর কাশ্মীরি ভাইদের কথা না বললেই নয় তারা অনেক আতিথেয় প্রিয় এবং অনেক মিশুক, বাংলাদেশীদের পেলে তারা অনেক খুশি হয় বিভিন্ন জায়গায় তাদের অনেক আন্তরিকতা পেয়েছি যা সত্যিই ভূলার নয়।

পরিশেষে বলতে চাই আমার দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নের দিল্লি -কাশ্মীর-লাদাখ-মানালি হয়ে আবার দিল্লির ৩১০০ কিলোমিটারের রাউন্ড ট্রিপটি আমার জন্য অনেক রোমঞ্চকর, চ্যালেন্জিং ও উপভোগ্য ছিল। এই অপরূপ সুন্দর্যের প্রকৃতিতে কাটানো ১৫ দিন আমার জীবনে ট্যুরের সেরা সময় হয়ে থাকবে, সারা জীবন মনে থাকবে ট্যুরের এই স্মৃতিময় গুলোর কথা। 

আর পরিবারের সমর্থন ও দোয়া ছাড়া কোন ট্যুর কখনোই সফল হয়না, আমার পরিবার সবসময় আমার পাশে ছিল। তাছাড়া দেশের বাইকার ভাইয়েরা ও আমার শুভাকাঙ্খীসহ আমার প্রাণের শহর ভৈরববাসী আপনারা যারা এই এ্যডভেঞ্চার ট্যুরটি সুন্দর ও সফল ভাবে শেষ করে আসার জন্য দোয়া করেছেন সকলের কাছে আমি কৃতজ্ঞ, আপনাদের অসংখ্য ধ্যবাদ জানাই এবং সকলের সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনা করছি।


শামীম আল মামুন

বঙ্গবন্ধু সরণি, ভৈরব।

ইমেইল: choice.shamim@gmail.com

মোবাইল: 01711-584425

এই লেখার মালিক এবং উনার ফেইসবুক থেকে সংগৃহীত 

https://www.facebook.com/choice.shamim

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন